যতদূর চোখ যায় মানুষ আর মানুষ। অনেকের হাতে ছিল পতাকা। স্লোগান ছিল মুহুর্মূহু। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে লাখো মানুষের সমন্বয়ে প্রতিটি মিছিল ছিল শাহবাগমুখী। বিকাল ৩ টায় শাহবাগসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বর, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, বাংলামোটর, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেটসহ সংসদ ভবনের সামনে কোথাও পা ফেলার যায়গা ছিল না। সবার চোখে মুখে ছিল উচ্ছ্বাস। এ যেন স্বাধীনতার স্বাদ। স্বৈরশাসকের হাত থেকে মুক্ত হলো বাংলাদেশ। শাহবাগ মোড়ে ফুলের দোকানের সব ফুল শোভা পেয়েছিল মানুষের হাতে হাতে। অনেকে গালে এঁকেছেন আল্পনা।
শেখ হাসিনা দেশত্যাগের পর উল্লাসে ফেটে পড়েন ছাত্র-জনতাসহ সব শ্রেণী পেশার মানুষ। আশপাশের সব এলাকা থেকে রাজপথে নেমে আসেন তরুণ-যুবা এমনকি বৃদ্ধরাও। অনেকে হুইল চেয়ারে এসে যোগ দেন আনন্দ মিছিলে।
আনন্দমিছিল থেকে নানা স্লোগান দিতে থাকেন আগতরা। এর মধ্যে- ‘পালাইছেরে পালাইছে শেখ হাসিনা পালাইছে, পালাইছেরে পালাইছে আওয়ামী লীগ পালাইছে, আওয়ামী লীগের আস্তানা ভেঙে দাও পুড়িয়ে দাও, শেখ হাসিনার সঙ্গী মানুষ খুনী জঙ্গি, শেখ হাসিনার বড় গুণ পুলিশ দিয়ে মানুষ খুন, ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই হাসিনার ফাঁসি চাই, ক্ষমা নাই ক্ষমা নাই শেখ হাসিনার ক্ষমা নাই, শেখ মুজিবের বংশ করে দাও ধ্বংস’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। এসময় উত্তেজিত জনতা বঙ্গবন্ধুর ছবি সম্বলিত বিভিন্ন ম্যুরাল ভেঙে কালিমা লেপন করে দেন। ঢাকা ক্লাবের গেটে শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি খুঁচিয়ে ভেঙ্গে ফেলেন তারা।
এতোদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ঢোকা কড়াকড়ি থাকলেও সোমবার বিকাল টিএসসিমুখী ছিল জনস্রোত। রাজু ভাস্কর্যের সামনে মেট্রোরেলের পিলারে শেখ হাসিনার ছবিতে জুতার মালা ঝুঁলিয়ে দেয় উত্তেজিত ছাত্র-জনতা। এরপর চলতে থাকে জুতার ঝড়। শেখ হাসিনার ছবি লক্ষ্য করে জুতা নিক্ষেপ করতে থাকেন অনেকে। ঘন্টাব্যাপী চলমান ছিল এই জুতা ঝড়।