দূষণ কমাতে ঢাকার আরও ১০টি সড়ককে নীরব এলাকা করার উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে এসব রাস্তা হর্নমুক্ত ঘোষণা করা হবে বলে সোমবার এক অনুষ্ঠানে বলেছেন তিনি।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, “দেশকে হর্নমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধন করা হবে। দেশকে হর্নমুক্ত রাখতে সবাইকে নিজের গাড়ি নিয়ন্ত্রিতভাবে চালাতে হবে এবং হর্ন ব্যবহার কমাতে হবে।”
এসব সড়ক হর্নমুক্ত হলে রাজধানীতে নীরব সড়কের সংখ্যা হবে ১৫টি। আর দেশজুড়ে পরিবেশ অধিদপ্তর ঘোষিত ‘নীরব এলাকা’ বেড়ে হবে ২২টি।
সবশেষ গত ১ অক্টোবর থেকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকা ও এর উত্তর-দক্ষিণে দেড় কিলোমিটার (স্কলাস্টিকা স্কুল থেকে হোটেল লো মেরিডিয়ান পর্যন্ত) এলাকাকে সম্প্রতি শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা, ২০০৬ এর বিধি-৪ অনুযায়ী ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণা করা হয়।
বিমানবন্দর এলাকা ছাড়া রাজধানীর বাকিগুলো হল সচিবালয়, আগারগাঁও, সংসদ ভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এলাকা।
আইন অনুযায়ী এসব এলাকায হর্ন বাজানো নিষেধ হলেও বাস্তব অবস্থা হল চালকরা যেন তা ভুলেই বসে আসেন। কেউ তা মানছেন না।
বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র-ক্যাপসের ক্যাপস এর এক গবেষণায় দেখা গেছে, নীরব এলাকার কোনোটি ‘নীরব’ নয়। সবগুলোতেই শব্দের মাত্রা বেশি।
সোমবার উত্তরার বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজিতে আয়োজিত ‘শহীদ সেলিম বিইউএফটি জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ২০২৪’ এর গ্র্যান্ড ফাইনালে উপদেষ্টা রিজওয়ানা শব্দ দূষণ কমাতে হর্নমুক্ত এলাকা বাড়ানোর কথা বলেন।
“আজকের তরুণরাই আগামীর বাংলাদেশ গড়বে। পরিবেশবান্ধব দেশ গঠনে তাদের অবদান রাখতে হবে। সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে তরুণ প্রজন্মকে সমস্যা সমাধানে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে নিরাপদ ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বিতর্কের মাধ্যমে তাদের বক্তৃতা দক্ষতা, বিশ্লেষণী ক্ষমতা এবং সমস্যার সমাধানে দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়।”
২৯৪৫ কেজি পলিথিন জব্দ
এদিকে কাঁচাবাজারে পলিথিন নিষিদ্ধের পর অভিযান শুরুর দ্বিতীয় দিনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পরিবেশ অধিদপ্তর ২ হাজার ৯৪৫ কেজি পলিথিন জব্দ করেছে।
সেই সঙ্গে অভিযানে ৩৫টি প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৩২ হাজার ৪০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে সোমবার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, সারাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয়, সরবরাহ ও বাজারজাত করার দায়ে ১৯টি ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
২০০২ সালে আইন করে পলিথিনের ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে দুই দশক পরও দেশের সব জায়গা পলিথিন ব্যাগে ছেয়ে গেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্বে আসার পর ১ অক্টোবর থেকে প্রথমে সুপারশপে এবং ১ নভেম্বর থেকে কাঁচাবাজারগুলোতে পলিথিন নিষিদ্ধ করা হয়।
পরে রোববার থেকে নিষিদ্ধ পলিথিন ও পলিপ্রোপাইলিন শপিং ব্যাগ উৎপাদন, মজুদ, পরিবহন, বিপণন ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হয়েছে।