রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

| ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

অপারেশনের জন্য অজ্ঞান করা হয়, না ফেরার দেশে তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

অপারেশনের জন্য অজ্ঞান করা হয়, না ফেরার দেশে তাপস

ছবি- মৃত তাপস চন্দ্র দাস।

পিত্তথলির পাথর অপসারণের জন্য ছোট একটা অপারেশনের প্রয়োজন ছিল তাপসের। সে লক্ষ্যে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। অপারেশনের আগে তাকে অজ্ঞান করা হলেও পরে আর তার জ্ঞান ফেরেনি। ইন্টারনেট ব্যবসায়ী তাপস চন্দ্র দাস পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে।

রবিবার সন্ধ্যায় পুরান ঢাকার কোতয়ালী থানার মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হসপিটালে এ ঘটনা ঘটে।

তাপস চন্দ্র দাস ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা পূর্বপাড়া এলাকার মৃত জিতিশ চন্দ্র দাসের ছোট ছেলে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসার পাশাপাশি মৈত্রী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

পরিবারের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসায় তাপসের মৃত্যু হয়েছে। অনভিজ্ঞ চিকিৎসা সহকারী দিয়ে অজ্ঞান করা ও ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে’ তাপসকে অস্ত্রোপচার কক্ষে (অপারেশন থিয়েটার) নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের।

এ বিষয়ে তাপসের শাশুড়ি ঝর্ণা রানী সরকার বলেন, ‘রবিবার বিকেলে পিত্তথলি পাথরের অপারেশনের জন্য আমার মেয়ের জামাইকে হাসপাতালে ভর্তি করি। সন্ধ্যার দিকে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার পর রাত ৮টা নাগাদ অপারেশন থিয়েটারে তাকে রেখে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে আমরা জানতে চাইলে, তাপসকে আইসিইউতে ভর্তি করানোর পরামর্শ দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ততক্ষণে তাপস মারা গিয়েছিল।’

তাপসের স্ত্রী সুমনা সরকার বলেন, ‘ভুয়া অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তারের মাধ্যমে আমার স্বামীকে অজ্ঞান করে আর জ্ঞান ফেরাতে পারেনি। ওটির টেবিলেই তাঁকে হত্যা করেছে। এটা নির্ঘাত হত্যাকাণ্ড। আমরা এর বিচার চাই। এ বিষয়ে আমরা থানায় মামলা করব।’

মেডিলাইফ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. আমিনুল হক জুয়েল বলেন, ‘দুর্ঘটনার কোনো ব্যাখ্যা নেই। অভিজ্ঞ অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তার দিয়েই রোগীকে অজ্ঞান করেই সার্জন অপারেশন করেছেন। এই রোগীর (তাপস) ক্ষেত্রে অজ্ঞান করার পর আর জ্ঞান ফিরে আসেনি।’

হাসপাতালে তাপসের শরীরে অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক ও জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের ডিপার্টমেন্ট অব সার্জিকাল অনকোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডাক্তার খন্দকার আব্দুল্লাহ আল হাছান। তিনি বলেন, ‘অপারেশন ভালো হয়েছে। পরে আমি পোস্ট অপারেটিভ এ রেফার দিয়ে ওটি থেকে বের হয়ে আসি। তবে রোগীর জ্ঞান কেন ফেরেনি, সেটা আমি বলতে পারব না, এটি অ্যানেস্থেসিয়া ডাক্তারের কাজ।’

কোতয়ালী থানার ওসি মো. শাহিনুর রহমান বলেন, 'ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তাপসের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃতের পরিবার অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’