গর্ভাবস্থায় বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। জটিলতার কিছু চিহ্ন বা লক্ষণ রয়েছে, যা পর্যবেক্ষণ করার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জরুরি।
প্রথম তিন মাসে জটিলতার লক্ষণ—
* অস্বাভাবিক বমি
* রক্তক্ষরণ
* প্রচণ্ড পেট ব্যথা।
তৃতীয় থেকে ষষ্ঠ মাসে জটিলতার লক্ষণ—
* রক্তক্ষরণ
* পেট ব্যথা ও বাচ্চার নড়াচড়া টের না পাওয়া।
সপ্তম থেকে নবম মাসে জটিলতার লক্ষণ—
* অতিরিক্ত মাথা ব্যথা।
* চোখে ঝাপসা দেখা।
* সারা শরীর ফুলে যাওয়া।
* পানি ভাঙা।
* মাসিকের রাস্তায় রক্তক্ষরণ।
* সম্ভাব্য ডেলিভারির তারিখের অনেক আগেই লেবার পেইন শুরু হওয়া।
উল্লেখ্য, গর্ভবতী মায়ের জটিলতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রক্তক্ষরণ। এ ধরনের জটিলতা যে কারো হতে পারে।
এর পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে একই গ্রুপের এক বা একাধিক রক্তদাতার মোবাইল নম্বর সংগ্রহে থাকা উচিত।
স্বাভাবিক কিছু সমস্যা
প্রথম তিন মাসে হালকা বমি বমি ভাব অথবা বমি ও মাথা ঘোরানো থাকতে পারে। গর্ভকালীন কোমরে ব্যথা হতে পারে এবং তা শেষ দিকে বেড়ে যেতে পারে। হাতে-পায়ে ব্যথা ও অন্যান্য অঙ্গে ব্যথা হতে পারে। সপ্তম মাসের পর থেকে সামান্য পা ফোলা হতে পারে।
এসব বিষয়ের জন্য মাকে আশ্বস্ত করতে হবে। কারণ এগুলো মায়ের স্বাভাবিক কারণেই হতে পারে। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।
প্রয়োজন নিয়মিত চেকআপ
ঝুঁকিমুক্ত থাকতে গর্ভবতী মাকে সর্বনিম্ন তিনটি চেকআপ করাতে হবে। প্রথমটি তৃতীয় মাসে, দ্বিতীয়টি ষষ্ঠ মাসে এবং সর্বশেষটি নবম মাসে। তবে সম্ভব হলে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র কাছে থাকলে প্রতি মাসে চেকআপ করানো ভালো।
চেকআপের সময় যেসব বিষয় পরীক্ষা করা হয়
গর্ভবতী মায়ের প্রথম তিন মাসে যে চেকআপ করা হয় তখন গর্ভবতী মায়ের ওজন, রক্তের প্রেসার ও রক্তশূন্যতার জন্য পরীক্ষা (সিবিসি) করা হয়। চতুর্থ মাস থেকে পূর্ববর্তী তিনটি বিষয়ের পরীক্ষাসহ আলট্রাসনোগ্রামের পরীক্ষা করা হয়, যার মাধ্যমে পেটে জরায়ুর উচ্চতা, বাচ্চার নড়াচড়া, বাচ্চার হার্টবিট—এগুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। পরিশেষে মনে রাখবেন, গর্ভধারণের পর থেকেই গর্ভবতী মায়ের শারীরিক ও মানসিক বিশেষ যত্নের প্রয়োজন।
- লেখক: প্রসূতি, স্ত্রীরোগ, হরমোনজনিত রোগ ও বন্ধ্যাত্ব রোগ বিশেষজ্ঞ এবং ল্যাপারোসকোপিক সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।