বৃহস্পতিবার বিকালে শাহবাগে কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মুখোমুখি পুলিশ
সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে সংসদে আইন পাস না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নতুন কর্মসূচি দিয়ে চার ঘণ্টা পর শাহবাগ থেকে অবরোধ তুলে নিয়েছেন কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতরা। কর্মসূচি অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার বিভিন্ন ক্যাম্পাসে হামলার প্রতিবাদে ১২ জুলাই, শুক্রবার সারাদেশে বিকাল ৪টায় সব ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।
নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, আমরা সব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাবো, নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের। আপনারা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। আমাদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনুন। আমাদের ওপর যে হামলা হয়েছে তার প্রতিবাদে আমরা সারাদেশের সব ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করবো।
আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, হাইকোর্টের আংশিক রায়ে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে। হাইকোর্টের আংশিক রায়ে বলা হয়েছে, সরকার চাইলে কোটার সংস্কার করতে পারে। এ বিষয়টিই আজ স্পষ্ট হয়েছে। যদি তাই হয়, তাহলে শেকৃবিতে কেন লাঠিচার্জ করা হলো? শাবিপ্রবিতে হামলা করা হয়েছে, চবিতে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর নারী পুলিশ হামলা করেছে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা হয়েছে, রাবিতে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। মাভাবিপ্রবিসহ অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলা করা হয়েছে। যারা হামলা করেছে তারা অতি উৎসাহী। সেই পুলিশদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আমরা মনে করি, এতে সরকারেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। আপনারা এতদিন আমাদের বলেছেন, আদালতের প্রতি ভরসা রাখতে। এখন আদালত আপনাদের দায়িত্ব দিয়েছে সেটি আপনারা পালন করুন।
সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে বৃহস্পতিবার চতুর্থ দিনের মতো সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনকারীরা। বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন। পরে সাড়ে ৪টার দিকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে তারা আন্দোলনের মূল পয়েন্ট শাহবাগের দিকে অগ্রসর হন।
তবে আন্দোলনকারীদের বাধা দেওয়ার জন্য আগে থেকেই শাহবাগ থানার কাছে ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থান নিয়েছিল পুলিশ। শিক্ষার্থীদের মিছিলের মুখে পুলিশ পরে পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগসহ বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে শাহবাগে গিয়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন আন্দোলনকারীরা। তাদের একটি অংশ বাংলামোটরের দিকে মিছিল নিয়ে এগিয়ে যায়। অন্যরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। পরে তারা শাহবাগ থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় পর্যন্ত সড়ক ব্লক করে আন্দোলন করেন।