সরকারি দপ্তরে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োজিত কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে আউটসোর্সিং কর্মীরা। সমস্যা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি ও ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছেন তারা।
শনিবার সকাল ১০ টার দিকে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে কয়েকশ কর্মচারী শাহবাগে অবস্থান নেন। আন্দোলনকালীন আশেপাশের এলাকায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এসময় যানবাহনে থাকা যাত্রীদের হেটে হেটে গন্তব্যস্থলে যেতে দেখা যায়। পরে সরকারের পক্ষ থেকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিলে বিকেল ৫টার দিকে অবরোধ কর্মসূচী তুলে নেন তারা।
এসময় আন্দোলনকারীরা আউটসোর্সিং নীতিমালা বাতিল এবং আউটসোর্সিং দৈনিক ভিত্তিক ও প্রকল্পে কর্মরতদের বহাল রেখে বয়স শিথিল করে চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানান।
তারা জানান, আউটসোর্সিং নীতিমালা-২০১৮ এর কারণে ঠিকাদার কর্তৃক টেন্ডার ব্যবসার মাধ্যমে সরকারের মূল্যবান অর্থ আত্মসাৎ করে যাচ্ছে। সারা বাংলাদেশের সকল ঠিকাদারগণ এই জনবল সর্বরাহের নামে প্রতিমাসে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাই সরকারের অর্থের অপচয় না করে আউটসোর্সিং নীতিমালা বাতিল করে নিয়োজিত সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে রাজস্বকরণ করে নাগরিকের ন্যায্য অধিকার আদায় করা হয়।
বিআইডব্লিউটিএর আউটসোর্সিং কর্মচারী মো. হাসনাইন বলেন, গত ছয় মাস রাজস্বভুক্ত কর্মীদের মতো সমানভাবে খেটেও কোনও বেতন পাচ্ছি না। আমরা যোগ্যতা, দক্ষতা, পরিশ্রম সবদিক থেকে সমান হয়েও বৈষম্যের শিকার। আমার রাজস্বভুক্ত সহকর্মীর বেতন, ভাতা, ছুটি সব ঠিকঠাক। আর আমার পরিবার চলবে কীভাবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এসব সমস্যার একটি মাত্রই সমাধান রাজস্বকরণ করা।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এসে আউটসোর্সিং কর্মীদের কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে বলেন, অবিলম্বে যেন দাবি কথা শোনা হয় এবং দাবি বাস্তবায়নে কি ধরনের পদক্ষেপ আপনারা নিতে পারে তাদের আশ্বস্ত করুন। এই সরকার ফ্যাসিবাদী সরকার না, এই সরকার জনগণের সরকার। আমি আশা করব, অবিলম্বে এই দাবির সুরাহা হবে।
উপদেষ্টার নিকট যাওয়া প্রতিনিধি দলের সদস্য ও আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের যুগ্ন সাধারণ সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, পুলিশের মধ্যস্থতায় আন্দোলনকারীদের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অন্তবর্তীকালীন সরকারের নিকট স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের সমস্যা সমাধানে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা যোক্তিক দাবি নিয়ে এখানে এসেছি৷ আমরা এই সরকারকে ১৫ দিনের সময় বেধে দিচ্ছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমাদের সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেতা হলে কঠোর থেকে কঠোরতম কর্মসূচীতে যেতে বাধ্য হবো।
আউটসোর্সিং কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান আনিস বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব আমাদের জানিয়েছেন, যতদ্রুত সম্ভব আমাদের দাবি আদায়ে কাজ করবেন। সংস্কার কমিটির মাধ্যমে এটি করা হবে। ভবিষ্যতে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের সঙ্গে বৈষম্য হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ারও কথা জানিয়েছেন তিনি।