পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকার কারণে বন্ধ রয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ল্যাবরেটরি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের। ব্যায় সংকোচন নীতি ও ‘ধার দেওয়া’ বন্ধের কারণে কর্তৃপক্ষ তাদের বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান ও বেতন-ভাতা চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছে স্কুলটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে তারা এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন খাত থেকে ভর্তুকির অর্থে চলে স্কুলটি। পরে ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি)। সেই থেকে বছরে ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয় তারা। তবে স্কুল পরিচালনায় বছরপ্রতি ব্যয় হওয়া ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইইআরসহ সহ বিভিন্ন খাত থেকে ‘ধার’ নেওয়া হয়। ‘ধার’ হিসেবে উল্লেখ থাকলেও সেই অর্থ আর ফেরত দেওয়া হয় না।
এদিকে সরকারের ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় পূর্বের মতো পর্যাপ্ত অর্থ পাচ্ছে না। এছাড়া বর্তমানে কোন ফান্ডেও পর্যাপ্ত অর্থ নেই। এজন্য গত ডিসেম্বর থেকে স্কুল শিক্ষকদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে।
ইউজিসি সূত্রে, অনুমোদনের পর প্রতিষ্ঠানটির জনবলকে আইইইআর এর ডেমোনেস্ট্রেশন ইউনিটের জনবল হিসাবে আত্মীকরণ করা হয়। একইসঙ্গে তাদের বেতন কাঠামো ও চাকুরিবিধি সরকারী স্কুল এন্ড কলেজের জনবলের অনুরূপ নির্ধারণ করা হয়।
মানববন্ধনে শিক্ষকরা বলেন, বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষকরা যথা নিয়মে বেতন পেলেও আমরা পাচ্ছি না। কর্তৃপক্ষ বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলেও সমাধান মিলছে না। আমাদের বেতন বন্ধ হওয়ায় পারিবার নিয়ে কষ্টে দিন পার করতে হচ্ছে। আমাদের দাবি ইউজিসি ও মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে আমাদের বেতনের ব্যবস্থা করা হোক।
প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুজাম্মিল হক মোল্লাহ, সহকারী শিক্ষক গোলাম মামুন, গোলাম কিবরিয়া, আনজুমান আরাসহ অন্য শিক্ষক-কর্মকর্তারা ও দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন হাতে মানববন্ধনে অংশ নেয়।
আইআইইআর এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মামুনুর রহমান বলেন, স্কুলটি আইআইইআর পরিচালনা করে ম্যানেজিং কমিটি হিসেবে। ইউজিসি থেকে পর্যাপ্ত বাজেট না দেওয়ার কারণে আমাদের ফান্ড থেকে ধার করে চলতো স্কুলটি। এই টাকা ধার বলা হলেও পরবর্তীতে আর ফেরত দেওয়া হয় না। যার ফলে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূইয়া বলেন, স্কুলের বেতন-ভাতা বাবদ যত টাকা প্রয়োজন তা আমরা পাই না। এই টাকা এতদিন অন্যান্য খাত থেকে ধার করে আমরা দিয়ে আসছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, এই বেতন এক দেড় বছর আগে ইউজিসি থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও বিভিন্ন খাত থেকে এটা চালাচ্ছি। আমরা ইউজিসির সাথে কথা বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব এ সমস্যার সমাধান করা হবে।