রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

| ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

ধ্বংসের পথে ৫০০ বছরের ফকির বালেগশাহ মসজিদ

ক্যাম্পাস ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:৪৪, ৩১ আগস্ট ২০২৩

ধ্বংসের পথে ৫০০ বছরের ফকির বালেগশাহ মসজিদ

তিন গম্বুজ ‘ফকির বাল্লেগ শাহ্ মসজিদ’ মোগল আমলে নির্মিত ,প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো মসজিদটি নাঙ্গলকোটে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রতিনিয়ত দূরদূরান্ত থেকে লোকজন মসজিদটিতে এক নজর দেখার জন্য, কেউবা এবাদত করার জন্য আসেন।

বর্তমানে ‘ফকির বাল্লেগ শাহ্ মসজিদে’ শেওলা আর লতা-পাতায় জন্ম নেওয়ায় এর রং নষ্ট হয়ে গেছে। পাশাপাশি নামাজ পড়ার জন্য লোকজনও বেশি হয়। তাই পুরোনো এই মসজিদের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য এর পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আরো একটি মসজিদ।

এটি ওই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মসজিদ বলে জানা গেছে। এখানে নারীদের নামাজের জন্য আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার বাংগড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে পশ্চিম-উত্তর দিকে দাড়াচৌ গ্রামে অবস্থিত ফকির বাল্লেগ শাহ্ খন্দকারের মসজিদ। এক শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত তিন গম্বুজের মসজিদটি।

মসজিদটিতে প্রতিদিন অনেক লোক আসে। এদের কেউ আসে এবাদত করার জন্য। কেউবা একনজর দেখার জন্য। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ পড়ার জন্য নাঙ্গলকোট উপজেলাসহ পাশের কয়েকটি উপজেলার নারী-পুরুষ এখানে আসেন। মসজিদের দেয়ালের একপাশে লেখা রয়েছে "পঞ্চদশ’ শতাব্দীর দিকে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়।

সূদুর ইরাকের বাগদাদ থেকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্য হজরত শাহ্জালাল (রা.)-এর সঙ্গে ৩৬০ অলির একজন।ফকির বাল্লেগ শাহ্ খন্দকার সনাতন ধর্মাবলম্বী অধ্যূশিত পাহাড়,নদী, জঙ্গল বেষ্টিত ইসলাম প্রচারের জন্য দাড়াঁচৌ গ্রামকে বেছে নেন। এখানে তিনি চুন,সুরকী দিয়ে তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেন।নির্মাণের সময় মসজিদের পাশে কোনো বসতি ছিল না।

পরে আস্তে আস্তে পুরো এলাকায় মানুষের বসবাস শুরু হয়। মসজিদটির খেদমতকারী স্থানীয়রা জানান, তাদের বাপ-দাদার কছে শুনেছেন, এই মসজিদের অনেক রহস্য রয়েছে। এখানে প্রতি বছর তার উরুস মাহফিল করা হয়। প্রতি শুক্রবার অনেক লোক মানতের উদ্দেশ্যে আসেন। প্রায় ৫০০ বছর আগের এই মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য সংস্কার করার প্রয়োজন। প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা খরচ করে এর পাশে নির্মাণ করা হয়েছে আরো একটি মসজিদ। তাই পুরান মসজিদে বর্তমানে নামাজ পড়া হয় না।

স্থানীয়দের দাবি, মসজিদটি অতি দ্রুত সংস্কার করা হোক।মসজিদ কমিটির সভাপতি শামীম খন্দকার বলেন, পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনেছেন, অনুমানিক ৫০০ বছর আগে বাল্লেগ শাহ্ ফকির আল বাগদাদি ইরাক থেকে ধর্ম প্রচারের জন্য আসেন। পরে তিনি এখানে ইট-সুরকি দিয়ে কারুকাজ খচিত তিন গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি নির্মাণ করেন। সরকারিভাবে মসজিদটি সংস্কার করে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, মসজিদটি সংস্কারের জন্য ওই এলাকার লোকজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। অবকাঠামো দুর্বল হওয়ায় বর্তমানে সেখানে নামাজ পড়ানো হচ্ছে না। তবে মসজিদটি সংস্কার করে ঐতিহাসিক মসজিদ হিসেবে রাখা প্রয়োজন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রায়হান মেহেবুব বলেন,মসজিদটি দেখে এসে, সংষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে।