শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

| ১৩ পৌষ ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

দেড় দশকে শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে : শিক্ষা উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

দেড় দশকে শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে : শিক্ষা উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, এটি অস্বীকার করার উপায় নেই যে দেশের উচ্চশিক্ষার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। জেলায় জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে অথচ অনেকগুলোতে মানসম্মত শিক্ষক নেই। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীও নেই, হয়তো একসময় স্বাভাবিক মৃত্যু ঘটবে এগুলোর। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোর বেহাল দশা। এগুলোতে প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই, মানসম্মত পড়াশোনাও নেই। সবমিলে দেশে শিক্ষিত বেকারদের সংখ্যা বাড়ছে দিনদিন।

রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘উচ্চশিক্ষায় বৈশ্বিক মান : বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। ‘বণিক বার্তা’ এর আয়োজন করে। 

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ আরও বলেন, দেশের শিক্ষার মান বৈশ্বিক মানে নিতে শর্টকার্ট কোনো উপায় নেই। এর জন্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিদেশি বিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। 

তিনি বলেন, গত দেড় দশকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক নিয়োগে প্রচন্ড অনিয়ম হয়েছে। আমরা উচ্চশিক্ষায় গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশে তৈরি করতে চাই। আমরা এমন পরিবেশ তৈরী করতে চাই যেখানে মেধার মূল্যায়ন হবে। উচ্চশিক্ষায় বৈশ্বিক অগ্রগতির দিকে যেন যেতে পারি আমরা। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন পরিবেশ রেখে যেতে চাই যে বর্তমান উপাচার্যদের যোগ্যতা ভবিষ্যতে নির্বাচিত সরকারের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সিংহভাগ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিল। উপাচার্যদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এতেই বোঝা যায় যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কতটা দলীয়করণ হয়েছিল! তিনি বলেন, এই প্রথম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে নিয়মমাফিক ছাত্র-ছাত্রীরা অবস্থান করছে। 

শিক্ষা উপদেষ্টা আরও বলেন, উচ্চশিক্ষায় দলীয়করণ যেমন মুদ্রার এক পিঠ অন্য পিঠে রয়েছে মেধার চরম অবমূল্যায়ন। তবে এত অনিয়ম দুর্নীতির মধ্যেও বিশ্ববিদ্যায়য়ে অনেক শিক্ষক রয়েছেন যারা গবেষণায় অনেক উচু মানের। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যাল মঞ্জুরী কমিশনকে উচ্চশিক্ষা কমিশন করে কর্মপরিধি বাড়ানোর কথা ভাবা হচ্ছে। তিনি বলেন, উচ্চ শিক্ষায় গবেষণা করতে হলে শিক্ষার বাজেট বাড়ানোর বিকল্প নেই। তবে এটা হঠাৎ করে হবে না। 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ। বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সরকারের ওপর কম নির্ভরশীল হওয়ার আহ্বান জানান ইউজিসি চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ইউজিসিকে উচ্চশিক্ষা কমিশন বলা যায় কি না, সে বিষয়ে আমাদের ভাবতে হতে। এটি একটি অসাধারণ ধারণা। এর মাধ্যমে আমরা সরকারের প্রতি নির্ভরশীলতা কমাতে পারব।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান প্রমুখ বক্তব্য দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমাও এতে বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।