মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

| ১ আশ্বিন ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

স্বাভাবিক ধারায় ফিরছে শিক্ষা, উপাচার্য নিয়োগ শুরু

সোহেল হাওলাদার

প্রকাশিত: ১০:০৯, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্বাভাবিক ধারায় ফিরছে শিক্ষা, উপাচার্য নিয়োগ শুরু

সরকার পতনের পর স্কুল-কলেজে পুরোদমে ক্লাস শুরু হয়েছে। খুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে সরকার। নিয়োগ দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও পাঁচ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। আশা করা যাচ্ছে শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সচল হবে, শুরু হবে নিয়মিত ক্লাস-পরীক্ষা।

তথ্যমতে, দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অন্তত ৪০টিতে এখনো নেই ভিসি-প্রোভিসি-ট্রেজারার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররা ক্লাস চালু করতে আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষকদের। কিন্তু সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত কর্তৃপক্ষ না থাকায় সে আলটিমেটামও কাজে আসছে না।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ। এসএমএ ফায়েজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক অধ্যাপক। তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান।

গত জুনের শেষ দিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আন্দোলনে উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপীঠে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সরকার পতনের পর স্কুল-কলেজগুলোতে ক্লাস চালু হলেও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো ক্লাস-পরীক্ষা শুরু হয়নি। ফলে দুই মাসের বেশি ধরে কার্যত অচল রয়েছে উচ্চশিক্ষা বিদ্যাপীঠগুলো। ক্লাস-পরীক্ষা না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুরু হয়েছে সেশনজট।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী প্রতিবেদককে বলেন, গত ৩০ জুন প্রথম সেমিস্টারের প্রথম পরীক্ষা দিয়েছি। ৩ জুলাই দ্বিতীয় পরীক্ষা নির্ধারিত ছিল। কিন্তু শিক্ষক আন্দোলনে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ হওয়ার পর সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলো। পরে ক্যাম্পাসই অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল। তিনি বলেন, ‘সরকার পরিবর্তন হলেও এখনো পরীক্ষা শুরু হয়নি। আমাদের অনুষদে কোনো সেশনজট নেই দীর্ঘ বছর ধরে। কিন্তু এবার সেশনজটে পড়ে গেলাম।’ এ জট কাটিয়ে উঠতে অতিরিক্ত ক্লাসের আয়োজন করার অনুরোধ জানান এই ছাত্রী।

অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে শুধু উপাচার্যের পদ খালি আছে, তা নয়। উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ অনেক প্রশাসনিক পদ খালি পড়ে আছে। আগে এই পদগুলো এতটাই দলীয়করণ করা হয়েছে, শূন্যপদগুলো পূরণের জন্য কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে, প্রশাসনিক দক্ষতা আছে, বৈশ্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে যোগ্য- এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এর মানে এই নয় যে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উচ্চমানের গবেষক-শিক্ষক নেই। দলীয় সংস্কৃতির কারণে যোগ্য অনেকে নিরবে কাজ করে যাচ্ছেন; কিন্তু তাদের আবার বৃহত্তর শিক্ষক সমাজের সঙ্গে যোগাযোগ নেই, এটাও একটা সমস্যা। তিনি বলেন, বাকি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একই সঙ্গে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হবে।

নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষপদগুলোতে সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের পদায়ন করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের যোগ্য স্থানে নিয়োগ করবে সরকার। উপাচার্যসহ শীর্ষ পদে নিয়োগ হয়ে গেলে দ্রুত শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।