জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারকে ক্যাডার কাঠামোর বাইরে রাখার প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস জেনারেল এডুকেশন অ্যাসোসিয়েশন। একই সঙ্গে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সব পর্যায়ের নীতিনির্ধারণী পদে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন ও উপসচিব পুলে উন্মুক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়াসহ ১৫ দফা দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
২৪ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা ক্যাডার নেতারা এসব কথা বলেন।
এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ তাজিব উদ্দিন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রফেসর মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, প্রফেসর ড. রুহুল কাদির, প্রফেসর ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল, প্রফেসর সৈয়দ মইনুল হাসান এবং প্রফেসর মুহাম্মদ ফাতিহুল কাদির প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোহাম্মদ তাজিব উদ্দিন বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের ২৬ ক্যাডারের মধ্যে বিরাজিত আন্তঃ ও অন্তঃক্যাডার বৈষম্য চিহ্নিত করে রাষ্ট্রের সিভিল প্রশাসনকে অধিকতর কার্যকর, গতিশীল ও যুগোপযোগী করার জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করবে। আমাদের আরও প্রত্যাশা ছিল, শিক্ষা ক্যাডার এবার হয়তো গত ৪০ বছর ধরে জমে থাকা সংকটসমূহ থেকে বের হয়ে আসার সুযোগ পাবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে ক্যাডার বহির্ভূত রাখার যে পরিকল্পনার কথা উঠে এসেছে, তা বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ১৬ হাজার কর্মকর্তাকে তীব্রভাবে আহত করেছে। এ আঘাত এতোটাই প্রকট যে, এটা শিক্ষা ক্যাডারের সকল সদস্যকে অন্তহীন উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এটা রাষ্ট্রকে দীর্ঘ মেয়াদে অস্থিতিশীল করার মত একটি পদক্ষেপ বলে আমরা মনে করি।
সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের পক্ষ থেকে ১৫ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হচ্ছে- বিসিএস সাধারণ শিক্ষাকে ক্যাডার বহির্ভূত করার পরিকল্পনা ও উদ্যোগ থেকে সরে আসার সুস্পষ্ট ঘোষণা দিতে হবে। সকল প্রকার কোটা-বৈষম্য তুলে দিয়ে মেধার ভিত্তিতে সরকারের উপসচিব পদে যোগদান নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সকল ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে সমান সুযোগ দিতে হবে। মন্ত্রণালয়সহ ক্যডার সংশ্লিষ্ট সকল পদে স্ব স্ব ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার একটি পেশা-বিশেষায়িত ক্যাডার হওয়ায় শিক্ষা স্তরে প্রশাসন ক্যাডারের অপেশাদার ও অশিক্ষক কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করতে হবে।
আগামী ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব দাবি মেনে না নেওয়া হলে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনে ২৫টি ক্যাডারের সংগঠন ‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ এর নেতৃবৃন্দ শিক্ষা ক্যাডারের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। শিক্ষা ক্যাডারের সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য ক্যাডারের চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা হয়।