বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

| ২৩ মাঘ ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা দিল সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৩৬, ২৮ জানুয়ারি ২০২৫

এবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের ঘোষণা দিল সরকার

ছবি: সংগৃহীত

অনুদানভুক্ত ১৫১৯টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছেন কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।

শাহবাগে শিক্ষকদের অবস্থানস্থলে এসে তিনি বলেছেন, “আপনাদের উপর পুলিশের জলকামান ও লাঠিচার্জের নিন্দা জ্ঞাপন করেছি। আপনাদের বঞ্চনার লাঘব হয়েছে। আপনাদের ছয় দফা দাবিসহ আরও বেশ কিছু কাজ করেছি। অতিরিক্ত কাজ করেছি।

“প্রথম দফা সকল প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের বিষয়টি- সকল এবতেদায়ী মাদ্রাসা পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণ করা হবে। ছয় দফার সব মেনে নেওয়া হয়েছে। ২০২৫ সাল থেকে আমরা এমপিওর কাজ শুরু করব।”

মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে যুগ্ম সচিব মাসুদুল হক এ ঘোষণা দিয়েছেন।

এর আগে সচিবালয়ে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলরতদের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

বৈঠক থেকে বের হয়ে শাহবাগে এসে আন্দোলনের আহ্বায়ক মোখলেছুর রহমান বলেন, “আমরা দীর্ঘক্ষণ আলোচনা করেছি। সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দল আসতেছে। আমাদের বলেছে, আপনাদের দাবি দাওয়া যৌক্তিক।”

এর পরপরই যুগ্ম সচিব মাসুদুল হক শাহবাগে এসে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন।

মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুদানভুক্ত ১৫১৯টি স্বতন্ত্র মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা এবং সহকারী শিক্ষকরা তিন হাজার টাকা করে অনুদান পেয়ে থাকেন। এর বাইরে আরও ৫ হাজার ৯৩২টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে, যেগুলো সরকারি কোনো অনুদান পায় না।

অনুদানভুক্ত মাদ্রাসাগুলোকে কোন প্রক্রিয়ায় জাতীয়করণ করা হবে- জানতে চাইলে যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক বলেন, “আগে এমপিওভুক্তি করে তারপরে এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে জাতীয়করণ করতে হবে। একটা আইন করতে হবে, তখন জাতীয়করণ করা হবে।”

এমপিওভুক্তির কাজ চলতি বছরের জুন থেকে শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “আর জাতীয়করণ শুরু হবে ২০২৬ এবং ২০২৭ এর মধ্যে মোটামুটি সব কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।”

জাতীয়করণ হলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে কী ধরনের সুবিধা মিলবে, এমন প্রশ্নের উত্তরে মাসুদুল হক বলেন, “উপবৃত্তি চালু হবে, মিডডে মিল এবং অবকাঠামোগত উন্নয় শুরু হবে।”

জাতীয়করণসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলরত স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গে গত রোববার শাহবাগে কাঁদুনে গ্যাস, জলকামান ব্যবহারের পাশাপাশি লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনা হয়।

সেদিন থেকে শাহবাগে পাবলিক লাইব্রেরির সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে রয়েছেন শিক্ষকরা। সোমবার সেখান থেকে দাবি পূরণে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তারা হুঁশিয়ার দেন- দাবি না মানলে শাহবাগ থানা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ ঢাকায় অবস্থান করবেন তারা। এর মধ্যে ঘোষিত সময়ে সচিবালয়ে বসা বৈঠকে সুখবর পেলেন দীর্ঘদিন দিন সুবিধাবঞ্চিত থাকা এবতেদায়ী শিক্ষকরা।

তাদের ছয় দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-

  • স্বতন্ত্র এবতেদায়ি মাদরাসা নিবন্ধন স্থগিতাদেশ ২০০৮ প্রত্যাহার করা;
  • রেজিস্ট্রেশনপ্রাপ্ত কোডবিহীন মাদরাসাগুলোকে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কোড নম্বরে অন্তর্ভুক্তকরণ;
  • স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার আলাদা নীতিমালা;
  • পাঠদানের অনুমতি, স্বীকৃতি, বেতন-ভাতা, নীতিমালা-২০২৫ অনুমোদন;
  • প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো অফিস সহায়ক নিয়োগের ব্যবস্থা নেওয়া;
  • প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো এবতেদায়ী মাদরাসায় প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি খোলার ব্যবস্থা নেওয়া।