রাজধানীতে সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবিতে ৩১ জানুয়ারি, শুক্রবারও সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। জুমার নামাজের পর থেকে দ্বিতীয় দিনের মতো কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শতাধিক শিক্ষার্থী। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এই সড়কে চলাচলকারী মানুষ।
বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক শেষ কর্মদিবসে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে কলেজের প্রধান ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা। এতে মহাখালী থেকে গুলশান-১ এ যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দিবাগত রাত চারটা পর্যন্ত সড়কটি অবরোধ করে রাখা হয়। এর ফলে সারা দিন রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন রাজধানীবাসী।
রাত চারটার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হলেও কয়েকজন শিক্ষার্থী কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন। তাঁদের কয়েকজন দাবি আদায়ে অনশন করছেন। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে কলেজের মূল ফটক থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে কলেজের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর থেকে শুরু হয় সড়ক অবরোধ।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, এখন ১২ জন অনশনে আছেন। সরকারের পক্ষ থেকে যতক্ষণ পর্যন্ত কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া না হবে, ততক্ষণ তাঁরা এ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।
শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে কলেজ ফটকে অনশনকারীদের সঙ্গে অবস্থান করছিলেন তিতুমীর কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর সানি। তিনি বলেন, শুক্রবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিনিধি আমাদের কাছে আসেননি। তিতুমীর কলেজকে লিখিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন ও অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
অবরোধে ভোগান্তিতে মানুষ
এদিকে বেলা তিনটার দিকে সরকারি তিতুমীর কলেজের সামনে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। শুধু অ্যাম্বুলেন্স ও রোগীবাহী গাড়ি ছাড়া কোনো যানবাহন কলেজটির সামনে দিয়ে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী অনেকের সঙ্গে অবরোধকারীদের বাগ্বিতণ্ডা হচ্ছে।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশার চালকের সঙ্গে কয়েক শিক্ষার্থীকে উত্তেজিত হতে দেখা যায়। ওই গাড়ির চালক আবদুল জলিল অবরোধকারীদের বারবার বলছিলেন, আমার সিএনজিতে অসুস্থ রোগী আছেন, আমার গাড়িটি ছেড়ে দিন। তবে অবরোধকারীরা গাড়িটি ছাড়ছিল না। গাড়িটিতে তখন একজন বয়োবৃদ্ধ নারীসহ তিন যাত্রীকে দেখা যায়।
পরে ক্ষিপ্ত হয়ে আবদুল জলিল বলতে থাকেন, ‘এভাবে আপনারা ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারেন না। গতকাল সারা দিন-রাত আপনাদের জন্য জ্যাম (যানজট) লেগে ছিল। আন্দোলনের নামে আপনারা মানুষকে হয়রানি করছেন।
এ সময় সিএনজিচালিত অটোরিকশার এই চালকের ওপর কয়েক শিক্ষার্থী চড়াও হন। পরে গণমাধ্যমকর্মীরা সেখানে গেলে গাড়িটিকে যেতে দেওয়া হয়।
এভাবে আরও কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে অবরোধকারীদের বাগ্বিতণ্ডা হতে দেখা গেছে। তবে বিকেল চারটা পর্যন্ত কলেজটির সামনে দেখা গেছে, কেবল অ্যাম্বুলেন্স এলে বাঁশের ব্যারিকেড সরিয়ে তা যেতে দেওয়া হচ্ছে। সড়ক অবরোধের কারণে অনেকে হেঁটে হেঁটে গন্তব্য যাচ্ছেন।