বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

| ৪ আশ্বিন ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার চায় ‘শিক্ষক সমাজ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭:১৯, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার চায় ‘শিক্ষক সমাজ’

দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ও রাজনীতিমুক্ত একটি শিক্ষক প্ল্যাটফর্ম ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজ’। জুলাই গণঅভ্যুত্থান থেকে উত্থিত এ প্ল্যাটফর্মটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান দ্বিদলীয় শিক্ষক সংগঠনের বাইরের একটি সংগঠন। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাব্যবস্থা সংস্কারে এ সংগঠনের শিক্ষকরা বিদ্যমান নানা জটিলতার সমাধানে কিছু খসড়া প্রস্তাবনা উত্থাপন করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সভাপতিত্বে সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার নিয়ে খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জোবাইদা নাসরিন, জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ড. খোরশেদ আলম এবং থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক ড. শাহমান মৈশান।

নিপীড়ন, হয়রানি, বৈষম্য, ভয়ের সংস্কৃতি এবং পদ্ধতিগত ভয়ের সংস্কৃতি ভেঙে একটি বৈষম্যহীন ও নিপীড়নমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে শিক্ষক সমাজ বেশ কিছু প্রস্তাব দিয়েছেন। সেসব প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে—

শিক্ষক-শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও হয়রানি বন্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘নিপীড়ন-নির্যাতন-বৈষম্যবিরোধী সেল’ গঠন করতে হবে; নিপীড়নের আওতায় শুধু নারী-পুরুষ সম্পর্ককে সীমাবদ্ধ না রেখে নারী-নারী, পুরুষ-পুরুষের মধ্যকার সম্পর্ককেও অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; নিপীড়নের আওতায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্কের পাশাপাশি শিক্ষার্থী-শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক-শিক্ষক সম্পর্ককে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; সিঅ্যান্ডডি নামক একটি ঊর্ধ্বতন বডি রেখে বিভাগ/ইনস্টিটিউটের মধ্যে ইন্টারনাল হায়ারর্কি রাখা যাবে না; বিভাগ/ইনস্টিটিউটের সব সিদ্ধান্ত সব শিক্ষকের উপস্থিতিতে একাডেমিক কমিটি নেবে; সিঅ্যান্ডডি যদি শেষ পর্যন্ত রাখতেই হয় তবে সেখানে সব ক্যাটাগরির শিক্ষক প্রতিনিধি থাকতে হবে।

বিভাগ/ইনস্টিটিউটের সভাপ্রধান পরিচালকের ক্ষমতাচর্চার কারণে অন্য শিক্ষকরা বৈষম্যের শিকার হলে তা প্রতিকারের ব্যবস্থা থাকতে হবে; কর্মক্ষেত্রে নিপীড়ন, নির্যাতন ও বৈষম্য রোধে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি ‘কোড অব কনডাক্ট’ তৈরি করে নির্দিষ্ট সময় পর পর, তার ওপর ট্রেনিং করা বাধ্যতামূলক করবে; প্রতিটি বিভাগ/ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী উপদেষ্টা সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘কোড অব কনডাক্ট’টির ওপর কর্মশালা করবেন, যেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের গোড়াতেই শিক্ষার্থীরা এ সংক্রান্ত সম্যক ধারণা পেয়ে যান; অভিযোগকারীর অভিযোগ অসত্য প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা থাকতে হবে; অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের নাম-পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না; তদন্ত ও বিচার চলাকালে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

অভিজ্ঞ ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের মাধ্যমে ‘নিপীড়ন-নির্যাতন-বৈষম্যবিরোধী সেল’ সদস্যদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, যেন তদন্ত ও বিচারিক কার্যক্রম যথাসম্ভব ত্রুটিমুক্ত হয়; অতীতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শাস্তিপ্রাপ্ত অনেককেই পরবর্তীতে কোর্ট থেকে অব্যাহতি নিয়ে কর্মস্থলে যোগ দিতে দেখা গেছে; বিশেষ পরিস্থিতি ব্যতীত সেলকে ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।