বাকৃবি ছাত্রদলের আহবায়ক কৃষিবিদ মো: আতিকুর রহমান
'ফ্যাসিবাদের পতন হলেও নানান রূপে-নানান পরিচয়ে ফ্যাসিবাদ ফিরে ফিরে আসছে আর শান্তিকামী-নিরীহ মানুষের উপর প্রতিশোধের থাবা বসাচ্ছে। ফ্যাসিবাদ অন্য জিনিস-যার দোসরদের কবল থেকে পাগলও বাদ যায় না।' বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ছাত্রদলের আহবায়ক কৃষিবিদ মো: আতিকুর রহমান এসব মন্তব্য করেন তিনি। ক্যাম্পাসগুলোতে সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলীর তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকান্ডের নেতৃত্ব দিয়েছে ওই হলের ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক জালাল আহমেদ। একই দিনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ে একইদিন প্রায় একই কায়দায় ‘মব জাস্টিস’ এর মাধ্যমে পিটিয়ে মানুষ হত্যার যে রীতি তা কোনভাবেই ফ্যাসিবাদের আচরণগত বৈশিষ্ট্য থেকে বিচ্ছিন্ন ভাবার সুযোগ নেই। অত্যন্ত আতংকের বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের এসব ঘটনায় শিক্ষার্থীরা জড়িত মর্মে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যা মোটেই সুখকর কোন বিষয় নয়।
আতিক আরো বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় ছাত্রদলের সদস্য পরিচয়ে চারজন শিক্ষার্থীর কথা এসেছে অথচ তারা কেউ ছাত্রদলের নেতা-কর্মী নয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কোন কমিটিই নেই। বিষয়টি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বিবৃতি দিয়ে স্পষ্ট করা হয়েছে। কেউ কোন অপকর্ম করে ছাত্রদলের নামে চালিয়ে দেওয়ার প্রবণতা নতুন কিছু নয়। নিজেদের কৃত অপকর্ম অন্যের নামে চালিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা ফ্যাসিবাদীদের দীর্ঘ দিনের অভ্যাস। এটা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র।
আতিক বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যূত্থানে ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদের মাস্টারমাইন্ড পদত্যাগের পরও তার দোসররা থেমে নেই। জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে নির্বিচারে গুলি ও গণহত্যা চালিয়ে নিজ দেশের মানুষের উপর মানবতা বিরোধী অপরাধ করেছে। শিক্ষার্থী, শিশু, বৃদ্ধ, পথচারি, রিকশাচালক, শ্রমিক মিলিয়ে হাজারেরও অধিক মানুষ ওই গণহত্যার শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন। আধুনিক সভ্য যুগে তো নয়ই পৃথিবীর ইতিহাসের অন্ধকার মধ্যযুগেও এমন গণহত্যার নজির পাওয়া যাবে না।