শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

| ৩ কার্তিক ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

প্রাথমিকের অনলাইন বদলি আবেদনে পদে ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০:৪৮, ১ এপ্রিল ২০২৪

প্রাথমিকের অনলাইন বদলি আবেদনে পদে ভোগান্তি

শনিবার (৩০ মার্চ) শুরু হয়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনলাইনে বদলির আবেদন। সোমবার (১ এপ্রিল) পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন আগ্রহী শিক্ষকরা। কিন্তু অল্প সময়ে অনলাইনে আবেদন করতে গিয়ে পদে পদে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা।

সার্ভার জটিলতা, ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) না আসায় আবেদন করতে পারছেন না বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষকরা। এমন পরিস্থিতিতে অনলাইন আবেদনের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন তারা।

ভুক্তভোগী শিক্ষকরা বলছেন, অনলাইনে আবেদন শুরুর পর থেকেই নির্ধারিত সার্ভার ডাউন। অনেক চেষ্টা করে ঢুকতে পারলেও আবেদন করা যাচ্ছে না। কখনো দেখানো হচ্ছে, ‘এ মুহূর্তে বদলি আবেদন চালু নেই’, আবার কখনো ‘বদলির সময়সীমা সমাপ্ত হয়ে গেছে’ দেখাচ্ছে। কেউ কেউ আবার ফরম পূরণ করে ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড (ওটিপি) পেতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে হয়রান। পাশাপাশি বদলির নিয়মে কিছু সংযোজন করা হলেও সার্ভারে তা আপডেট না করায় নতুন শিক্ষকরা আবেদন করতে পারছেন না।

অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের দাবি, একযোগে অনেকে সার্ভারে ক্লিক করায় মাঝেমধ্যে সমস্যা হচ্ছে। অনেকে সফলভাবে আবেদন করেছেন। সার্ভারের জটিলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য তারা চেষ্টা করছেন। তারপরও যদি বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষক থাকেন এবং তারা আবেদন করতে না পারেন, সেক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে।

অধিদপ্তর সূত্র ও প্রাথমিকের শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, সারাদেশে বর্তমানে ৬৫ হাজার ৫৬৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এতে শিক্ষকের সংখ্যা তিন লাখ ৫৯ হাজারের বেশি। তাদের অর্ধেকই বদলিপ্রত্যাশী।

২০২২ সালে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমন্বিত অনলাইন বদলি নির্দেশিকা করা হয়। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী ওই বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথমবার অনলাইনে আন্তঃউপজেলা বদলির আবেদন নেওয়া হয়। সেসময় আবেদন করতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষকরা। এরপর আরও দুই দফা অনলাইনে বদলির আবেদন নেওয়া হলেও নানা অভিযোগ ওঠে।

সম্প্রতি বদলি নির্দেশিকায় ২০২৩ সালের অক্টোবরে কিছু পরিবর্তন এনে আবার অনলাইনে বদলির আবেদন নিচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এবারও একই সমস্যায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষকদের। তারা ত্রুটিমুক্ত সার্ভারে সহজে যেন আবেদন করা যায়, তা নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে পলিসি অ্যান্ড অপারেশন বিভাগের পরিচালক মনীষ চাকমা গণমাধ্যমকে বলেন, সফটওয়্যারে কোনো ত্রুটি আছে বলে মনে হয় না। একসঙ্গে বেশি মানুষ ওয়েবসাইটে ক্লিক করায় সার্ভার ডাউন হয়ে পড়ছে। অনেক সময় সঠিক সেবাটি পাচ্ছেন না শিক্ষকরা। তবুও আমরা সার্ভার স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অনলাইনে বদলি সংক্রান্ত সহায়তা দিতে বিভাগভিত্তিক হটলাইন চালু করেছে অধিদপ্তর। সেখানে চারজন কর্মকর্তাকে সমন্বয় করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সহায়তা নিতে যে নম্বরগুলোতে যোগাযোগ করা হয়েছে, সেগুলোতে কল করলেও রিসিভ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা। ফলে সমস্যায় পড়লেও তা জানাতে এবং সমাধানের পথ পাচ্ছেন না বদলিপ্রত্যাশীরা।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন বলেন, সারাদেশ থেকে কল আসছে। সেজন্য হয়তো দায়িত্বপ্রাপ্তরা মাঝে মাঝে হিমশিম খাচ্ছেন। তারা সহায়তা করার জন্য সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন।

অনলাইনে আবেদনে পদে পদে ভোগান্তিতে পড়ে সফলভাবে আবেদন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে না পারায় সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন বদলিপ্রত্যাশী শিক্ষকরা। তারা আরও তিনদিন সময় বাড়িয়ে অনলাইনে বদলি নেওয়া এবং সার্ভার সচল রাখার ব্যবস্থা নিতে অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) শাহ রেজওয়ান হায়াত গণমাধ্যমকে বলেন, যদি দেখা যায় আবেদন কম পড়েছে কিংবা আবেদন করতে না পেরে অনেকে যোগাযোগ করছেন, সেক্ষেত্রে সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

এজেড