প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদের তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ২১ জেলার মৌখিক পরীক্ষা শেষ হলেও দীর্ঘদিনেও চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়নি। অন্য দুটি ধাপের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর নির্বাচিত চাকরিতেও যোগদান করেছেন। ফলে এ নিয়ে হতাশায় রয়েছেন তৃতীয় ধাপে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা ৪৬ হাজারের বেশি চাকরিপ্রার্থী।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতামতের অপেক্ষায় রয়েছে বিষয়টি। কোটা বণ্টন কেমন হবে, সেটা নিয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে। এজন্য ফল প্রকাশে দেরি হচ্ছে।
অধিদপ্তরের পলিসি অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে জানান, কোটা বিষয়ে নতুন প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হবে নাকি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসারে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো ব্যাখ্যা দেয়নি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এজন্য ফলাফল প্রকাশের কার্যক্রম স্থবির রেখেছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকের কোটা পদ্ধতি থাকবে কি না, কেমন হবে; সে বিষয়ে জনপ্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। মতামত পাওয়ার পর এ নিয়োগের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে।’
জানা গেছে, প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯ অনুসারে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগ বিধিমালা-২০১৯–এ বলা হয়েছে, নারী, পোষ্য ও পুরুষ- এ তিন কোটার প্রতিটি ক্যাটাগরিতে অবশ্যই ২০ শতাংশ বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। তবে এভাবে তিন কোটায় বিজ্ঞান বিষয়ের যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া যাবে।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলতি বছরের ২৩ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে কোটা-সংক্রান্ত আগের সব পরিপত্র, প্রজ্ঞাপন, আদেশ, নির্দেশ, অনুশাসন রহিত করা হয়েছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নতুন প্রজ্ঞাপন অনুসারে, সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ কোটার ভিত্তিতে হবে।
ফলে প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ করা হবে নাকি জনপ্রশাসনের সবশেষ কোটা বণ্টনের প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হবে, তা নিয়ে বিপাকে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
২০২৩ সালের ১৪ জুন সহকারী শিক্ষক নিয়োগে তৃতীয় ধাপের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গত ২৯ মার্চ এ দুই বিভাগের লিখিত পরীক্ষা হয়। ২১ এপ্রিল প্রথম দফায় ফল প্রকাশ করা হয়। পরদিন সংশোধিত ফল প্রকাশ করে অধিদপ্তর। এতে ৪৬ হাজার ১৯৯ জন প্রার্থী মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হয়।