প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (পিইডিপি) আওতায় স্কুল ফিডিং প্রকল্প বাস্তবায়ন করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। শিশুদের পুষ্টি নিশ্চিত ও প্রাথমিক থেকে ঝরে পড়া রোধে ২০০১ সালে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের বিস্কুট দিয়ে শুরু হয় এই প্রকল্প। ২০২২ সালের জুন মাস পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে চালানোর পর নতুন করে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
গতকাল মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) অধিদপ্তরে এ প্রসঙ্গে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছে সরকার। ইতোমধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরি করে প্লানিং কমিশনে পাঠিয়েছে অধিদপ্তর। অপেক্ষা এখন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) মিটিংয়ে প্রস্তাব পাস হওয়ার।
অধিদপ্তরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, এবারের স্কুল ফিডিং প্রকল্পের জন্য অন্তত সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার চিন্তা করছে সরকার। প্রকল্পের মেয়াদ হবে ৩ বছর। এছাড়া আগের খাদ্য তালিকা পরিবর্তন করে নতুন প্রকল্পে বিভিন্ন ধরনের ফল রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সপ্তাহের ৫ দিন বিভিন্ন খাদ্য তালিকা দেয়া হবে।
প্রস্তাবিত সাপ্তাহিক এসব খাদ্য তালিকায় এনার্জি ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ, মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ৩২ দশমিক ২ শতাংশ, প্রোটিন ১৬ দশমিক ৪ শতাংশ এবং ফ্যাট ২১ দশমিক ৭ শতাংশ রাখার চিন্তা করা হেচ্ছ। এরমধ্যে প্রতি রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবারে ১টি ডিম এবং ১২০ গ্রামের ১টি বান থাকবে। এছাড়া প্রতি সোমবার ২০০ এমএল ইউএইচটি দুধ এবং ১টি ১২০ গ্রামের বান প্রতি বুধবারে ৭৫ গ্রাম বিস্কুট এবং ১০০ গ্রাম সাইজের ১টি কলা অথবা ফল।
আজ (২৯ জানুয়ারি) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মো. মিজানুল হক বলেন, প্লানিং কমিশনের বেশ কিছু নির্দেশনা থাকায় আমরা নতুন করে পরিকল্পনায় কিছু পরিবর্তন এনেছি। আগের পরিকল্পনা অনুযায়ী হাউজহোল্ড ইনকাম এন্ড এক্সপেন্ডিচার-২০১৬ সালের দারিদ্র চিত্র অনুযায়ী উপজেলাগুলো নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তীতে হাউজহোল্ড ইনকাম এন্ড এক্সপেন্ডিচার-২০২২ অনুযায়ী দারিদ্র চিত্র নির্ধারণ করা হয়। ২০২২ সালের দারিদ্র চিত্র অনুযায়ী দেশের ৬২ জেলার ১৫০টি উপজেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হবে।
তিনি আরো যোগ করেন, এ প্রকল্পের আগের নাম ছিল মিড ডে মিল প্রকল্প। কিন্তু বর্তমানে এটিকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি হিসেবে বলা হচ্ছে। আমরা আশাবাদী যে একনেকের সভা থেকে প্রজেক্ট অনুমোদন হলে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সেটা ইমপ্লিমেন্টেশন করা সম্ভব হবে। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য সব কার্যক্রম ইতোমধ্যে আমরা সম্পন্ন করে রেখেছি। প্রজেক্ট অনুমোদন হলে পিডি নিয়োগ হয়ে সেটা মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়িত হবে।