রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

| ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

পুলিশের হামলা উপেক্ষা করে কুবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ, আহত অর্ধশতাধিক

কুবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২০:২০, ১১ জুলাই ২০২৪

পুলিশের হামলা উপেক্ষা করে কুবি শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক অবরোধ, আহত অর্ধশতাধিক

সকল চাকরির সকল গ্রেডে ও সকল প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বৈষম্যমূলক কোটা নিরসনের দাবিতে 'বাংলা ব্লকেড' কর্মসূচির অংশ হিসেবে পঞ্চম দিনের মত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করতে গেলে পুলিশের বাধার মুখোমুখি হন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ ও শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

বৃহস্পতিবার (১১জুলাই) বিকেল তিনটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আনসার ক্যাম্প এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশের বাধার পেরিয়ে বিকাল ৫ টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবরোধ করেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মূল ফটক অতিক্রম করে আনসার ক্যাম্প আসলে পুলিশ ক্যাম্পাসে ফিরে যাওয়ার জন্য বলে শিক্ষার্থীদের। শিক্ষার্থীরা কথা না মেনে মহাসড়কের দিকে এগুতে চাইলে প্রথমে লাঠিচার্জ করা হয়। পরবর্তীতে ফাঁকা গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়। 

এতে  বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী আব্বাস উদ্দীন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী বায়েজিদ হোসেন,  গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফরহাদ মিয়া কাওছার, তৌহিদুল ইসলাম জিসান, আল শাহরিয়ার অন্তু, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের মো: ইমরান হোসেন সহ আরো অনেকে আহত হন। এছাড়া সাংবাদিকদের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের  বার্তা টুয়েন্টি ফোরের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি অনন মজুমদার এবং চ্যানেল আইয়ের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি সৌরভ সিদ্দিকী, ক্যাম্পাস টাইমসের আল শাহরিয়ার অন্তু আহত হয়ে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা নিয়েছেন।

ক্যাম্পাস থেকে অবরোধ চলাকালে  শিক্ষার্থীরা 'লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই, আমার সোনার বাংলায়, বৈষ্যমের ঠাই নাই, লেগেছেরে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে, একাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, সারা বাংলা খবর দে কোটা প্রথার কবর দে ইত্যাদি বলে স্লোগান দেন। এরপর মহাসড়কে এসে টায়ার জ্বালিয়ে স্লোগান চালিয়ে যান।

শিক্ষার্থীদের উপরে হামলার বিষয়ে বাংলা বিভাগের শিক্ষর্থী তাওহীদ সানি বলেন, আমরা শান্তি পূর্ণ আন্দোলনের জন্য কোটবাড়ি বিশ্বরোড যাচ্ছিলাম। রাস্তায় পুলিশ আমাদের বাধা দেয় এবং আমাদের উপর হামলা চালায়। এতে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। পুলিশের এই ন্যাক্কার জনক কাজের জন্য আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

তিনি বলেন, আমাদের কেন পুলিশ বাধা দিবে? কেনই বা আমাদের উপর হামলা চালাবে? আমরা তো রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনে যাচ্ছি। 

লোকপ্রশাসন বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী রবিউল হোসেন বলেন,  আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের অতর্কিত হামলার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। তাদের হামলায় আমার অসংখ্য ভাই আহত হয়ে মেডিক্যালে আছেন। এর সুষ্ঠু বিহিত ও আমাদের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আজকে রাজপথ ছাড়ছি না। আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রতিও তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা বলেন, 'আমি নিশ্চিত নই কত জন আহত। আমিও শিক্ষার্থীদের সঙ্গেই আছি। তবে তিনজনকে দেখেছি হাসপাতালে নিতে দেখেছি।'

পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান রাফি বলেন, 'আমরা শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলতে চেয়েছিলাম। আমরা তাদের প্রতিপক্ষ না। বিষয় হচ্ছে তারা যদি দেশের কোনো ব্যস্ততম রাস্তা বেআঈনীভাবে আটকে রাখা হয় সেক্ষেত্রে আমাদের দায়িত্ব সেটিকে ক্লিন রাখা। আমরা শুধু আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি।'

উল্লেখ্য, এর আগে একই দাবিতে গত ৪, ৭, ৮ এবং ১০ জুলাই ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়ক প্রায় চার ঘন্টা করে অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা।