মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

| ১ আশ্বিন ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার শঙ্কা, ঝুঁকি নিয়ে হলে থাকছেন ইবি ছাত্রীরা

ইবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার শঙ্কা, ঝুঁকি নিয়ে হলে থাকছেন ইবি ছাত্রীরা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলের পুরোনো ব্লকে ফের বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে দূর্ঘটনার পর ছাত্রীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ ঘটনার পর ছাত্রীদের ঝুকির কথা বলে অন্য স্থানে থাকতে বলে কর্তৃপক্ষ।

তবে থাকার ব্যবস্থা না হওয়ায় বৈদ্যুতিক সংযোগ সাময়িক মেরামত করে ছাত্রীদের ঝুঁকি নিয়েই হলে থাকতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানে আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থী ধারণক্ষমতা হলেও বর্তমানে প্রায় দেড়শো ছাত্রী থাকছেন বলে জানা গেছে।

এদিকে ছাত্রীদের দাবি অনুযায়ী হলে সার্বক্ষণিক দুইজন ইলেকট্রিশিয়ান থাকার কথা রয়েছে। তবে থাকবেন একজন। তিনি বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার পর হলে আসবেন বলে হাউজ টিউটররা ছাত্রীদের জানিয়েছে।

এদিকে দূর্ঘটনার পর হলের আবাসিক শিক্ষক ও ডিনদের সঙ্গে ছাত্রীরা মঙ্গলবার ও বুধবার দুই দফায় সাক্ষাৎ করেছেন। ছাত্রীরা ডিনদের সাথে সাক্ষাতে চার দফা দাবি জানিয়েছে।

তাদের দাবিগুলো হলো, দুইজন ইলেকট্রেনেশিয়ান সব সময় হলে অবস্থান করা, বর্তমানে যে সমস্যা চলছে তা দুই ঘন্টার ভিতরে সাময়িক ভাবে ঠিক করা, হলের কোথায় কোন বাজেট কোথায় ব্যয় হয় তা শিক্ষার্থীদের মাঝে সচ্ছ হিসাব পেশ করা এবং বর্তমানে যে সমস্যা চলছে তা স্থায়ী ভাবে ঠিক করতে কত টাকা লাগবে এবং কত সময় লাগবে তা শনিবারের মধ্যে উপস্থাপন করা। এছাড়া শনিবারের মধ্যে সকল দাবি মানা না হলে অনশনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

ছাত্রীদের অভিযোগ, খালেদা জিয়া হলের পুরোনো ব্লকে প্রায়ই ছোট-বড় বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনা হয়। সর্বশেষ জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বড় দূর্ঘটনা ঘটে। সেসময় হলের তিনতলা পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ মেরামত করার কথা থাকলেও দুই তলা পর্যন্ত করা হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় মেরামতের নামে জোড়াতালি মেরামত করা হয়েছে। তাদের থাকার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে সেখানে থাকতে হচ্ছে।

হলের কয়েকজন ছাত্রী বলেন, সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) হঠাৎ সন্ধ্যার দিকে হলের লাইট বন্ধ হয়ে যায়। নিচ থেকে শব্দও হচ্ছিল। এর আগে দূর্ঘটনার কারণে কেউ আর সাহস করেনি সেখানে যাওয়ার। পরে হলের নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে জানাই। একজন ইলেকট্রিশিয়ান এসে ঠিক করে দিয়ে যায়। কিন্তু এটা তো স্থায়ী সমাধান না। আমরা ডিনদের সাথে কথা বলতে গেছিলাম। প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা আশ্রাফী স্যার আমাদের বলছিল তিনি জরুরি দায়িত্ব আছেন শুধু। জীবনের চেয়ে আর জরুরি কিছু কি আছে? আমাদের জীবনের কি কোনো দাম নেই? আমরা বিষয়টির একটি স্থায়ী সমাধান চাই।

প্রকৌশল দফতর ও হল প্রশাসন জানিয়েছে, খালেদা জিয়া হলের পুরোনো ব্লকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমদিকের ভবন। এই হলটার বয়স প্রায় ৩০ বছর। সেখানে যে ধরণের লোড পরে লাইনগুলো তেমন শক্তিশালী নয়। তাছাড়া লাইনগুলো অনেক পুরোনো হওয়ার কারণে বারবার এমন ঘটনা ঘটছে। সেখানে পুরো লাইন মেরামত করা জরুরি। এর জন্য বড় বাজেট প্রয়োজন।

হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এরশাদুল হক বলেন, হলে সার্বক্ষণিক একজন ইলেকট্রিশিয়ান থাকবেন। ঝুঁকি আছে কি নেই এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করবো না। ইঞ্জিনিয়াররাই এটা ভালো বুঝবেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম শরীফ উদ্দিন বলেন, একটা তারের লুস কানেকশনের জন্য এই ঘটনার সূত্রপাত হয়। পরবর্তীতে সেই তারটি ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। ছাত্রীদের দাবি অনুযায়ী হলে সার্বক্ষণিক একজন ইলেকট্রিশিয়ান থাকবে। আপাতত ভয়ের কিছু নাই। তাছাড়া আমরা স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে কত টাকা লাগতে পারে এই নিয়ে একটা ইস্টিমেট করছি। ইস্টিমেট কর্তৃপক্ষকে দিব। তারা আর্থিক অনুমোদন দিলে আমরা কাজ শুরু করবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আ ব ম ছিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, সার্ভিসিং করতে কেমন বাজেট লাগবে সেটা জানানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের বলেছি। খুব দ্রুতই স্থায়ী সমাধান হবে বলে আশা করছি।

এআই