সহকারী অধ্যাপক সুব্রত কুমার বিশ্বাস
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রী মুসলিম এবং অভিযুক্ত শিক্ষক অবিবাহিত ও সনাতন ধর্মের হওয়ায় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
অভিযুক্ত শিক্ষক সুব্রত কুমার বিশ্বাস বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও পাবনার ঈশ্বরদী পৌর শহরের পোস্ট অফিস এলাকার সুভাষ বিশ্বাসের ছেলে এবং ভুক্তভোগী ছাত্রী একই বিভাগের মাস্টার্সের ইভিনিং ব্যাচের শিক্ষার্থী।
অভিযোগকারী ওই ছাত্রী শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগ এনে লিখিতভাবে বিভাগীয় প্রধানের কাছে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে ওই শিক্ষককে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,সুব্রত কুমার বিশ্বাস তাঁরই বিভাগের ইভিনিং ব্যাচের এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কয়েক বছর ধরে চলা এই সম্পর্ক এক পর্যায়ে শারীরিক ঘনিষ্ঠতায় রূপ নেয়, যেখানে ওই শিক্ষক বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে ছাত্রী অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের পর বিষয়টি জানাজানি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে ।
এ বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান খাদিজাতুল কুবরা বলেন, আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। এজন্য ক্লাস-পরীক্ষাসহ একাডেমিক সকল কার্যক্রম থেকে ওই শিক্ষককে অব্যাহতি দিয়েছি এবং এবিষয়ে ব্যবস্থা নিতে আমার বিভাগের পক্ষ থেকে উপাচার্য স্যার বরাবর একটি তদন্ত রিপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে জমা দিয়েছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, বিষয়টি আসলে লজ্জাজনক। এমন শিক্ষককে ক্লাসে দেখলে বিব্রত লাগে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় শিক্ষককে নিয়ে যদি নৈতিকতার প্রশ্ন ওঠে তাহলে খুবই আত্মসম্মানে লাগে। এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রতিবেশী একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে তথ্য পাচারের প্রমাণ পেয়েছিল আমাদের দেশের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
এবিষয়ে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও অভিযুক্ত শিক্ষক সুব্রত কুমার বিশ্বাসের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তার হোয়াটসঅ্যাপে নক দিয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ওই বিভাগের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌননিপীড়ন বিরোধী একটি পূর্ণাঙ্গ সেল রয়েছে। আমি তাদেরকে বিষয়টি তদন্ত করতে বলেছি, যদি সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে অবশ্যই এটার উপযুক্ত বিচার হবে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি নতুন, বিশ্ববিদ্যালয়কে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো করে গড়ে তুলবো।