শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

| ৩ কার্তিক ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

১২ অক্টোবর ১৭ তম জন্মদিন বিশ্ববিদ্যালয়টির

বেরোবি দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

আলামিন সাদিক সায়েম, বেরোবি

প্রকাশিত: ২০:৫০, ১১ অক্টোবর ২০২৪

বেরোবি দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা

আগামী ১২ অক্টোবর বেগম বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম জন্মদিন ও ১৭তম বছরে পদার্পণ তথা বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর মধ্যেই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বাংলার ইতিহাসে স্থান করে নিয়েছে। নতুন এক সূর্য উদয়ের স্বপ্ন দেখিয়েছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাঈদ। বিশ্ব এখন এক নামে চেনে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে। আবু সাঈদের আত্মত্যাগের প্রতিদানরূপ হলেও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্য থেকে মুক্তি হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা তুলে ধরেছেন বেরোবি প্রতিনিধি আলামিন সাদিক সায়েম

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়  আমাদের শিক্ষার অগ্রযাত্রা ও স্বপ্নেরও প্রতিফলন। বিশ্ববিদ্যালয়টি নিয়ে আমার অনুভূতি অত্যন্ত গভীর। এটি শুধু আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্র নয়, বরং একটি মানসিক বিকাশের কেন্দ্র, যেখানে আমরা জ্ঞানার্জনের পাশাপাশি ব্যক্তি হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার সুযোগ পাই।বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করা হয়েছে বেগম রোকেয়ার নামে, যিনি নারীশিক্ষার অগ্রদূত এবং সমাজ পরিবর্তনের অনন্য দৃষ্টান্ত ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠানের ছায়ায় বেড়ে ওঠা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়, কারণ এটি শুধু উত্তরবঙ্গের নয়, পুরো দেশের শিক্ষাক্ষেত্রে আলো ছড়াচ্ছে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জও আছে। প্রশাসনিক স্থবিরতা, অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা, এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে কিছু ঘাটতি লক্ষণীয়।

সাবিনা ইয়াসমিন, শিক্ষার্থী ইংরেজি বিভাগ

 

শিক্ষাগবেষণার সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে

বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের কিছু প্রত্যাশা রয়েছে যা বর্তমান সংকট কাটিয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো আরও স্বরণীয় করে রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়ন দরকার , সঠিক সময়ে ক্লাস ও পরীক্ষার আয়োজন, মানসম্পন্ন শিক্ষকের উপস্থিতি, এবং গবেষণার সুযোগ বৃদ্ধি করা দরকার আমরা দেখেছি,  স্বাধীনতা স্মারক যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা, মেয়েদের আবাসিক সংকট কমিয়ে আনার জন্য   হল স্থাপন, ওয়াজেদ মিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন সবই স্থবির হয়ে আছে। আমরা প্রত্যাশা রাখি, দ্রুতই এই স্থাপনাগুলোর কাজ শেষ হবে এবং আমরা আরও একধাপ এগিয়ে যাব।শিক্ষার্থীদের গবেষণা কাজের সুযোগ নিয়ে বিশেষ প্রত্যাশা আছে আমাদের ।
আমি  দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, যথাযথ উদ্যোগ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এই বিশ্ববিদ্যালয় দেশের অন্যতম প্রধান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারবে।

যুথি রাণী, শিক্ষার্থী, লোক প্রশাসন িভাগ

​​​

উত্তরের জনপদের একমাত্র আশার প্রদীপ

বেরোবি যেন একটা স্বপ্ন, আবেগ, ভালোবাসা এবং আকাঙ্খার নাম। হাজারো শিক্ষার্থীর লালায়িত স্বপ্ন, সে বেরোবিয়ান হবে।উচ্চ শিক্ষা অর্জন করে দেশের কল্যাণে ভূমিকা রাখবে,পরিবারকে স্বপ্ন দেখাবে। কিন্তু আচমকা দমকা হওয়ার মতো, তাদের স্বপ্নগুলো ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায়, তখন তারা জানতে পারে নানাবিধ দূর্নীতি ও সমস্যা কথা। চরম মাত্রায় বৈষম্য, অবহেলা আর বঞ্চনার শিকার, উত্তরের জনপদের একমাত্র আশার প্রদীপ "বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়"।  না পায় পর্যাপ্ত আবাসন সুবিধা, না আছে আধুনিক গবেষণাগার বা শিক্ষা সরঞ্জাম।গবেষণার জন্য নেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ। সকল প্রকার নিয়োগ এবং মেগা প্রজেক্টগুলোতে দুর্নীতিতে ভরপুর, যেন এক দূর্নীতির  আতুরঘর ছিল বেরোবি। জুলাই ছাত্র -জনতার অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে,নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে  শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন- আধুনিক গবেষণাগার, সম্পূর্ণ আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হবে বেরোবি।

আবু রায়হান, শিক্ষার্থী রসায়ন বিভাগ

 

বেরোবিকে জ্ঞানের যাদুঘর হিসেবে দেখতে চাই

ক্যাম্পাস টা যেহেতু আবু সাইদের, শহীদ ভাই যেভাবে বুক চিতিয়ে চেয়েছেন নিজের অধিকার,  আমি একজন বেরোবির  শিক্ষার্থী হিসেবে সেই  শিক্ষার্থীর অধিকার টুকুই চাই ,  যা আমার বিশ্ববিদ্যালয় দিতে বাধ্য । সাইদ ভাই  যেমন  বুক চিতিয়ে বলেছেন আমি বেরোবির একজন শিক্ষার্থী, আমি তেমন গৌরবে বলতে চাই আমি বেরোবিে একজন শিক্ষার্থী। শহীদের  রক্তের বিন্দু বিন্দু ফুটাই যেভাবে নাম লেখেছে আবু সাইদ তার রক্তের প্রত্যেক টি বিন্দু যা চাই তাই বেরোবি উত্তরের বাতিঘরে ফুটে উঠুক সেটা যদি গৌরবের কৃষ্ণচূ্ড়াও হয় তবু ভালো। বেরোবি কে  গাছের জাদুঘর নয় আমরা জ্ঞানের জাদুঘর হিসেবে দেখতে চাই। তবে গাছ লাগানো কে মন্দ ভাবে দেখছি না।

ফাত্তাহান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ

 

যুগোপযোগী ডিসিপ্লিন প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি

প্রাণের বিদ্যাপীঠ আজ সতেরো বছরে পদার্পণ করলো। তবুও প্রতিষ্ঠার ১৭ বছরেও কেন জানি মনের কোণে অপূর্ণতার রেখাপাত নাড়া দেয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২টি বিষয়ে পাঠদান থাকলেও আরো কিছুসংখ্যক যুগোপযোগী ডিসিপ্লিন  কর্তৃপক্ষ চালু করতে পারেনি, যেমন- আইন বিভাগ, নাট্যকলা ও থিয়েটার, ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অন্তর্ভুক্ত আরো যুগোপযোগী কিছু ডিসিপ্লিন যা প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি।

জাকের হোসেন পাশা, শিক্ষার্থী রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ, বেরোবি।