বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের অনন্য উদ্যোগে চালু হয়েছে ন্যায্যমূল্যের বাজার, যা অস্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন ভোলা রাস্তার কাঁচাবাজার এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে। সোমবার (৪ নভেম্বর) সকাল থেকে শুরু হওয়া এই বাজারের প্রধান উদ্দেশ্য বাজারে সবজির ঊর্ধ্বগতির সাথে জড়িত সিন্ডিকেটের প্রভাব হ্রাস করে ক্রেতাদের মাঝে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা। শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছাসেবীভাবে বিনালাভে পণ্য বিক্রির এ উদ্যোগ নিয়েছে যাতে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক চাপ কিছুটা কমে।
শিক্ষার্থীদের উদ্যমী পদক্ষেপ
এই উদ্যোগের প্রাথমিক সংগঠক, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. মুমিনুল ইসলাম বলেন, “কাঁচাবাজারের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার জন্য আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা ক্যাম্পাসের অস্থির পরিস্থিতির কারণে এই উদ্যোগ কিছুদিন পিছিয়ে দিয়েছিলাম। তবে এখন থেকে বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত এই উদ্যোগ চালিয়ে যাব।” মুমিনুল আরও জানান, তারা প্রথম দিনেই ১০ ধরনের সবজি সরবরাহ করছেন এবং ক্রেতাদের চাহিদা দেখে ভবিষ্যতে পণ্যসামগ্রীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে।
বাজারের মূল্য তালিকা ও সাশ্রয়ী দাম :
প্রথম দিনের বাজারে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজি বিক্রি হয়েছে, যেমন পেঁপে কেজি ৩৫ টাকা, পটল কেজি ৫০ টাকা, কুমড়া কেজি ৫৫ টাকা, কাঁচা মরিচ কেজি ১২০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১১০ টাকা। বাজারে আসা ক্রেতারা জানান, তারা অন্যান্য বাজারের তুলনায় এই বাজারে প্রায় ২০-৩০ টাকা সাশ্রয়ে পণ্য কিনতে পারছেন।
ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া:
বাজার করতে আসা মোহাম্মদ সেলিম মিয়া বলেন, “শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। বাজারে সবকিছুর দাম যেভাবে বেড়েছে তাতে আমাদের জন্য এমন সাশ্রয়ী দাম অত্যন্ত উপকারী। আশা করি এভাবে নিয়মিত চালু থাকলে আরো মানুষ উপকৃত হবে এবং সিন্ডিকেটও ভেঙে যাবে।” একইভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফজিলত বলেন, “এটা অসাধারণ একটা উদ্যোগ। আমাদের জন্য অনেক সাশ্রয়ী। শিক্ষার্থী হিসেবে এই সাশ্রয়ী বাজার আমাদের অনেক সাহায্য করবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও আশা
এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে স্থানীয়রা আশা করছেন যে, বাজারে স্থায়ীভাবে এমন ব্যবস্থা বজায় থাকলে অন্যান্য বিক্রেতারাও ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রিতে উৎসাহিত হবেন। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন যে, বাজারের চাহিদা অনুযায়ী নতুন পণ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং প্রতিদিন এই বাজারে আরও বেশি পরিমাণে ক্রেতা সমাগম হবে বলে তারা আশাবাদী।
এ ধরনের সেবামূলক উদ্যোগ শুধু বরিশাল নয়, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা করা যাচ্ছে, যা একদিকে সামাজিক দায়বদ্ধতা পূরণ করবে এবং অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমাতে সাহায্য করবে।