সার্কুলার ছড়াই অবৈধভাবে উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করে রবিবারে মধ্যে নিয়োগ বাতিলের আল্টিমেটাম দিয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সন্ধায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে এই ঘোষণা দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ২০০১ এর ১১/৯ ধারা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর, রিজেন্ট বোর্ডের পূর্বানুমোদনক্রমে, বিশ্বদ্যিালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারি নিয়োগ করিতে এবং তাঁহাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। কিন্তু এই নিয়োগে রিজেন্ট বোর্ডের কোনো ধরনের অনুমোদন নেয়া হয়নি। এছাড়াও আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত নতুন রিজেন্ট বোর্ডই গঠিত হয়নি সেখানে অনুমোদন নেয়ার তো প্রশ্নই আসে না।
সূত্র জানায়, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১০ সালে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মজুরি কমিশনের প্রেরিত পত্রের প্রেক্ষিতে বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের পূর্বনুমোদন ব্যাতিরেকে এডহক, দৈনিক ভিত্তিক জনবল, চুক্তিভিত্তিক, মাস্টার রোল, নিরাপত্তা কর্মী, আনসার, আউটসোর্সিং নিয়োগ দেয়া যাবে না।
তাছাড়াও তারা আরও উল্লেখ করেন, গত ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১ তম রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তে বলা হয়, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনোক্রমেই চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা যাবে না’ একইসঙ্গে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক-কর্মকর্তার চুক্তি বাতিল পূর্বক-অব্যহতি প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সর্বোচ্চ পদে এমন একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। এই সময়ে এসে এই ধরনের বিতর্কিত ব্যক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদে নিযুক্ত করা আমরা কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য মনে করি না।
নিয়োগের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, প্রথমকথা হচ্ছে রিজেন্ট বোর্ডের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে। এটা পুনর্গঠিত করতে হবে, এর জন্য সময়ের দরকার। কারন রিজেন্ট বোর্ডে মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি থাকে, বিভিন্ন জায়গার প্রতিনিধি থাকে। যার ফলে পুনর্গঠন করতে সময় লাগবে। আর এর মধ্যে ছাত্রদের একটা দাবি ছিল রবিবারের মধ্যে কিছু কিছু পজিশন চেঞ্জ করতে হবে এর মধ্যে একটা ছিল প্রাইভেট সেক্রেটারির বিষয়টি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রাইভেট সেক্রেটারির চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ হয়।
সার্কুলার ছাড়াই নিয়োগ দেওয়া যায় কিনা প্রশ্নের উত্তরে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোঃ মোরাদ হোসেন বলেন, আমি স্যারকে (উপাচার্য) বলেছিলাম এটার জন্য রিজেন্ট বোর্ডের অনুমতি প্রয়োজন হয়। স্যার আমাকে বলেছিল এখন নিয়োগ দেই, বোর্ড গঠন হলে আমরা পরে অনুমতি নিয়ে নিব। ভিসি স্যার চেয়েছে তাই নিয়োগ হয়েছে।
উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী নিয়োগের বিষয়ে ইউজিসি সচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, কাউকে নিয়োগ দিতে হলে সার্কুলার দিতে হবে, নিয়োগ বোর্ড গঠন করতে হবে, নিয়োগ বোর্ড যাচাই বাঁচাই করে তারপর নিয়োগ দিতে পারবেন। এর বাইরে তিনি নিয়োগ দিতে পারবেন না। যদি তিনি নিয়মগুলো ফলো না করে থাকেন তাহলে তিনি নিয়ম ভঙ্গ করেছেন। আমি এই অভিযোগটি ক্ষতিয়ে দেখবো।
/রিশাদ হোসেন