শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪

| ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

Campus Bangla || ক্যাম্পাস বাংলা

জুমার দিনের আমল

ক্যাম্পাসবাংলা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১২:২১, ১১ অক্টোবর ২০২৪

জুমার দিনের আমল

ইসলামে জুমাবার একটি মর্যাদাপূর্ণ দিন। এই দিনকে ‘ইয়াওমুল জুমাআ' বলা হয়। আল্লাহ তাআলা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল ও সমস্ত জগৎকে ছয়দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয়দিনের শেষ দিন ছিল জুমার দিন। যে দিনগুলোতে সূৰ্য উঠে তন্মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দিনও জুমার দিন।

হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘সূর্য উদিত হওয়ার দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এই দিনে তাঁকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ (মুসলিম: ৮৫)

হাদিসের আলোকে জুমার দিনে মুসলিম উম্মাহর করণীয় বিশেষ কিছু আমল রয়েছে এবং সেগুলো অনেক ফজিলতপূর্ণ। আমলগুলো করার মাধ্যমে নারী-পুরুষ উভয়ে সমান ফজিলত লাভ করবেন। তবে, যে আমলগুলো মসজিদে যাওয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, সেগুলো মূলত পুরুষদের জন্য। বাকি যে আমলগুলো রয়েছে তার সবগুলোই নারী পুরুষ সকলেই করতে পারেন। যেমন— গোসল করা, বেশি বেশি দরুদ পাঠ, সুরা কাহাফ তেলাওয়াত, দোয়া কবুলের দিনে দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ করা ইত্যাদি। 

এছাড়া নারীরা জুমার নামাজের পরিবর্তে ঘরে জোহরের নামাজ আদায় করবেন। উম্মে সালামা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, ‘নারীদের ঘরে নামাজ পড়া বাইরে নামাজ পড়ার চেয়ে উত্তম’ (আল মু’জামুল আওসাত: ৯১০১)। হাদিসে আরও এসেছে, ‘নারীদের নামাজের উত্তম জায়গা হলো তাদের ঘরের নির্জন কোণ।’ (মুসনাদে আহমদ: ২৬৫৪২)
মসজিদে যাওয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত আমলগুলোর সওয়াব না পাওয়ার ক্ষেত্রে আক্ষেপ করে থাকেন অনেক নারী। তাদের জন্য আলেমদের বক্তব্য হচ্ছে— আপনারা বাড়ির মাহরামদেরকে ওসব আমলের ব্যাপারে সহযোগিতা করতে পারেন। তাদেরকে উক্ত আমলগুলোর ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করতে পারেন। যেমন—উত্তম পোশাক পরিধান করা, সুগন্ধি ব্যবহার করা, দ্রুত মসজিদে যাওয়া, পায়ে হেঁটে মসজিদে যাওয়া, তাহিয়্যাতুল মসজিদ আদায় করা, মনোযোগের সঙ্গে খুতবা শোনা এবং জুমার নামাজ আদায় করা। 

এসব সাধারণত পুরুষদের আমল। কিন্তু আপনি মেয়ে হলেও তাদেরকে উক্ত আমলে উৎসাহ দেওয়ার কারণে বা সহযোগিতার কারণে আপনিও ওই আমলের সওয়াব পেয়ে যাবেন। কারণ কেউ কোনো ভালো কাজের দিকে অপরকে আহ্বান করলে, সেই আহ্বানকারীও উক্ত ভাল কাজের সওয়াব পেয়ে থাকেন।
এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সৎপথের দিকে ডাকবে, সে তার অনুসারীর সমান সওয়াব পাবে। অথচ অনুসরণকারীর সওয়াব কমানো হবে না। অন্যদিকে যে ব্যক্তি ভ্রষ্টতার দিকে ডাকবে, সে তার অনুসারীর সমান পাপে জর্জরিত হবে। তার অনুসারীর পাপ মোটেও কমানো হবে না। (আবু দাউদ: ৪৬০৯)


অতএব জুমার দিন মহিলাদের আমল রয়েছে। পুরুষের মতো নারীরাও জুমার দিনের আমলগুলো করার মাধ্যমে পূর্ণ সওয়াব হাসিল করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
উল্লেখ্য, অনেক মহিলা মনে করেন, পুরুষ জুমার পর ঘরে ফেরার আগ পর্যন্ত নামাজ পড়া যাবে না। এটি সঠিক নয়। জুমার নামাজের সময় হওয়ার পর বিনা প্রয়োজনে বিলম্ব করা নারীদের উচিত নয়। আসলে নারী-পুরুষ কারো জন্যই উচিত নয়। বিশেষত যখন নামাজের মোস্তাহাব ওয়াক্ত হয়ে যায়। তাই জুমার দিনে নারীরা জোহরের নামাজের মোস্তাহাব সময় হওয়ার পর নামাজ আদায় করতে পারবেন। চাই ওই সময় মসজিদে জুমার জামাত হোক বা না হোক। শুক্রবার জোহরসহ যেকোনো দিন যেকোনো ওয়াক্তের নামাজ নারীরাও মোস্তাহাব সময় দেখে আদায় করবেন। পুরুষদের ঘরে ফেরার অপেক্ষা করার প্রয়োজন নেই। (আল-বাহরুর রায়েক ও কানজুদ দায়িক)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে জুমার দিনের সুন্নতগুলো আমল করার এবং জুমার দিনের মতো প্রতিদিন যত্নসহকারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।