এইচএসসি-২০২৩ পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এক বর্ণাঢ্য সংবর্ধনা আয়োজন করেছিলো ইউসিসি গ্রুপ। ইউসিসি গ্রুপের অধীনে পরিচালিত দুইটি প্রতিষ্ঠান ইউসিসি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং এবং ইউনিক মেডিকেল ও ডেন্টাল কেয়ার এর সৌজন্য আয়োজিত হয় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। গত ৩০ ডিসেম্বর, শনিবার, রাজধানীর ফার্মগেট খামারবাড়ি কেআইবি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় এই অনুষ্ঠান।
এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক এবং প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন ইউসিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সিনেট সদস্য ড. এম এ হালিম পাটওয়ারী।
এরপর ইউসিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. এম.এ. হালিম পাটওয়ারির স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। অত্র অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য আমন্ত্রিত অতিথিদের আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান তিনি। কৃতি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্য এক আবেগঘন বক্তব্য প্রদান করেন তিনি। এইচএসসি পরবর্তী জীবনে কীভাবে কঠিনতম উচ্চশিক্ষার ভর্তি পরীক্ষাগুলোতে সফলতা লাভ করা যেতে পারে— সেই ব্যাপারে অত্যন্ত সুচিন্তিত গাইডলাইন প্রদান করেন তিনি।
এরপর দৈবচয়ন পদ্ধতিতে বিজ্ঞান, মানবিক এবং বাণিজ্য বিভাগের একজন করে ছেলে এবং মেয়ে শিক্ষার্থী তাদের অনুভূতি প্রকাশ করে স্টেজে এসে। তাদের স্বপ্নপিপাসু চোখে ইউসিসির ভবিষ্যৎ স্বপ্নের বীজ কীভাবে বপন করে দিচ্ছে — সেই স্তুতিবাক্য ছিলো তাদের কণ্ঠে।
একজন কৃতী ছাত্রী তার এইচএসসি ফলাফলের পেছনে তার মায়ের অকৃত্রিম এবং সীমাহীন অবদানকে স্মরণ করছিলেন। সৌভাগ্যক্রমে ঠিক তখনই স্টেজে বসে ছিলেন খ্যাতনামা 'মা' উপন্যাসের রচয়িতা আনিসুল হক।
এরপর আনিসুল হক তার বক্তব্যের শুরুতেই 'মা' নিয়ে তার সেই আবেগকে তুলে ধরেন। স্বয়ং আনিসুল হকের কণ্ঠে তার মা উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মুক্তিযোদ্ধা আজাদ আর তার মায়ের ত্যাগস্বীকারের গল্প শুনে পুরো অডিটোরিয়াম নিস্তব্ধ হয়ে যায় যেন মুহূর্তকাল।
সাহিত্যের সুললিত ভাষায় এই স্বপ্নবাজ শিক্ষার্থীদের চোখে ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মানে একেকজন যোগ্য ও দক্ষ মানুষ হিসাবে গড়ে তোলার প্রেরণা দেন আনিসুল হক। আর ইউসিসি গ্রুপকে তিনি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান শিক্ষার্থীদের জন্য এত বড় একটা আয়োজন করার জন্য।
প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে এসে স্মৃতির ঝাঁপি যেন খুলে দিলেন এমিরেটাস অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ। একুশে পদক জয়ী এই মহান ব্যক্তিত্ব তুলে ধরেন তার সময়ের এইচএসসি পরীক্ষার স্মৃতি। তার জীবনের নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরে শিক্ষার্থীদের সেগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়ার উৎসাহ যোগান। দেশের ও দশের মঙ্গলের জন্য কীভাবে ভবিষ্যত শিক্ষাজীবন এবং কর্মজীবনের দিকে ধাবিত হতে পারে শিক্ষার্থীরা, সেই দিকনির্দেশনাও ছিলো তার এই বক্তব্যের ভেতর।
তাছাড়া শিক্ষাক্ষেত্রে দারুণ অবদানের জন্য ইউসিসি গ্রুপের চেয়ারম্যান ড. এম. এ. হালিম পাটওয়ারির ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
এরপর শুরু হয় কৃতী শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট প্রদান। ক্রেস্ট প্রদান শেষে অতিথিবৃন্দের সাথে গ্রুপ ছবিতে অংশগ্রহণ করে কৃতী শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন অনুভূতি তাদের গর্বিত অভিভাবকদেরও ছুয়ে যায়। এত চমৎকার এবং সুবৃহৎ একটা আয়োজনের জন্য তারাও ইউসিসি পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
সবশেষে কৃতী শিক্ষার্থীদের জন্য সৌজন্য উপহার, ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং রিফ্রেশমেন্টের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকতার যবনিকাপতন ঘটে।
সংবর্ধিত এই শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যতে পথচলায়ও এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে, সেই প্রত্যাশাতেই শেষ হয় এই বর্নাঢ্য আয়োজনের।