বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়নে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে ‘এপোস্টিলমাইগভ’ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজ।
সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ৭ জুলাই বাংলাদেশ এপোস্টিল কনভেনশনে স্বাক্ষর করে। এই কনভেনশন অনুযায়ী, আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে বিদেশ গমনেচ্ছুক শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীদের সার্টিফিকেট এপোস্টিল পদ্ধতিতে সত্যায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যথায়, বাংলাদেশের পাবলিক ডকুমেন্ট বিদেশে কার্যকর হবে না।
আরও বলা হয়, এপোস্টিলে নানা ধরনের সনদ, দলিল, হলফনামা সত্যায়ন করা হলে বিদেশে তা নতুন করে সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না। এপোস্টিল কনভেনশনের আওতায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এটুআই এবং ইউজিসি দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নেওয়া বিদেশ গমনেচ্ছুক শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট এপোস্টিলমাইগভ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ডিজিটাল সত্যায়নে কাজ করবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে এই প্ল্যাটফর্ম তৈরির কাজ চূড়ান্ত করা হবে। এই প্ল্যাটফর্মে শিক্ষার্থীরা আবেদন ফি জমা দিয়ে সহজে সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্টের জন্য আবেদন করতে পারবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর সনদের তথ্য যাচাই বাছাই করে ইউজিসি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সত্যায়নের জন্য প্রেরণ করবে। সার্টিফিকেট ডিজিটাল সত্যায়নে কিউআর কোড যুক্ত থাকবে। সার্টিফিকেট সত্যায়নে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে আসবে, ব্যয় সাশ্রয়ী হবে এবং বিদেশের দূতাবাসসহ নানা দপ্তরে সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।
সভায় প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজ বলেন, শিক্ষার্থীদের কারণে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই সবার আগে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হবে। তিনি বিদেশগামী শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট সত্যায়নে সব বিশ্ববিদ্যালয়কে এপোস্টিললমাইগভ প্ল্যাটফর্মে যুক্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এটি বাস্তবায়নে ইউজিসি থেকে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে তিনি আশ্বস্থ করেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মাসুদ মাহমুদ খন্দকার। তিনি বলেন, গত এক মাসে বিদেশ গমনেচ্ছুকদের ১ লক্ষ ৯০ হাজার সার্টিফিকেট সত্যায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে একাডেমিক সার্টিফিকেট প্রায় ১ লক্ষ। এ কাজে বিদেশ গমনেচ্ছুকদের বিভিন্ন দপ্তরে যেতে হয়েছে। এতে, তাদের অনেক অর্থ খরচ, সময় ব্যয় ও ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এপোস্টিল কনভেনশনের অধীনে সার্টিফিকেট ডিজিটালি সত্যায়ন করা গেলে ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে বলে তিনি মনে করেন। নতুন প্রজন্মের স্বপ্ন অনুযায়ী জাতি বির্নিমাণে অনলাইনে সত্যায়ন বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে এবং সাটিফিকেটের নকল প্রবণতা রোধ করবে বলে তিনি মনে করেন।